ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির তুলনা এবং মুসলিম বিশ্বের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা


ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির তুলনা এবং মুসলিম বিশ্বের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ইহুদীরা সংখ্যায় কম হলেও জ্ঞান বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির শিক্ষায় এগিয়ে থাকার কারণে সারা বিশ্বে এগিয়ে গেছে। তারা উন্নত প্রযুক্তি ও অস্ত্র আবিষ্কার করছে এবং সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলো কিনে নিচ্ছে, আর ইজরায়েল পুরো বিশ্বের অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু আমরা মুসলিমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে অনেক পিছিয়ে এবং এই বিজ্ঞান চর্চায় আমাদের অনীহা। আমরা শুধু মুখস্ত বিদ্যার বিষগুলোতে আগ্রহী, বিজ্ঞানকে আমরা দূরে ঠেলে দিচ্ছি। আমরা কোকাকোলা ইহুদীদের বানানো বলে তা বর্জন করছি, কিন্তু মুসলিম বিশ্বে সমাদৃত হবে এমন পানীয় তৈরির বিজ্ঞান আমাদের জানা নেই। আমরা শুধু চাকরি করে মাস শেষে বেতন পেয়ে সন্তুষ্ট, সন্তুষ্ট মসজিদে কিছু টাকা দান করে। আমরা মুসলিমরা কুরআনকে মুখস্ত করাটাকেই জ্ঞানের উচ্চতম পর্যায় বলে মনে করি। আমরা মুসলিমরা শুধু ইজরায়েরল নিষ্ঠুর কাজের জন্য তাদের বিরুদ্ধে দোয়া করেই ইস্তফা দেই। কিন্তু ইজরায়েল তথা ইহুদীদের কিভাবে, কোন জ্ঞান অর্জন করে, কোনটি আবিষ্কার করে প্রতিহত করা যায় সেটার জন্য একটুও কাজ করিনা। আর দিন শেষে আমরা মুসলিমরা বলি , ১৯৪৮ থেকে ২০২৫ এতদিন ধরে আল্লাহর কাছে দোয়া করে আসছি ইজরায়েল ধ্বংস হয়ে যাক, কিন্তু ধ্বংস কেন হয় না? শুধু কি দোয়াতেই আমাদের কাজ শেষ? আর কেউ কেউ মোবাইল ফোনে, ফেসবুকে, ইউটিউবে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে পোস্ট দেই - যেই ফোন, ফেসবুক, ইউটিউবের পিছনে ইহুদিরাই আছে। কোকাকালা বর্জন করতে ঘোষণা দিলেঅ এগুলো বর্জনের ঘোষণা দিতে পারিনা, কারণ আমরা মুসলিমরা কিছুই আবিষ্কার করতে পারিনি। আর কেউ কেউ তো ইজ্রায়েলের বিরুদ্ধে পোস্ট করে সেখান থেকে ডলার ইনকামের পায়তারাও করে। তাই, মুসলিমদের জ্ঞান, বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি থেকে দূরে থেকে শুধু মুখস্ত জ্ঞান দিয়ে ইজরায়েল ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সম্ভব নয়, এমনকি তাদেরকে শুধু দোয়া করে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের মুসলিমদের দরকার ইহুদী-ইজরায়েলের থেকেও উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চা ও উন্নয়নে কাজ করা।
জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একটি জাতি বা সম্প্রদায়ের উন্নতির মূল চাবিকাঠি। ইহুদি সম্প্রদায়, বিশেষ করে ইসরায়েল, সংখ্যায় কম হলেও জ্ঞানচর্চা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাধ্যমে বিশ্বে প্রভাবশালী অবস্থান তৈরি করেছে। অন্যদিকে, মুসলিম বিশ্ব অনেক ক্ষেত্রে এই জ্ঞানভিত্তিক উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এই প্রবন্ধে ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে তুলনা করা হবে এবং মুসলিম বিশ্বের জন্য গঠনমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হবে।
ইহুদি সম্প্রদায়ের জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে অগ্রগতি
শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব: ইহুদি সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। ইসরায়েলে শিক্ষা ব্যবস্থা বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ও গবেষণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন: ইসরায়েল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবক দেশগুলোর একটি। সাইবার নিরাপত্তা, কৃষি প্রযুক্তি, এবং সামরিক অস্ত্রে তাদের অবদান অতুলনীয়।
অর্থনৈতিক প্রভাব: ইসরায়েলের উন্নত প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি হয়, যা তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে। তবে, "বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ" করার দাবি অতিরঞ্জিত হতে পারে।
গবেষণা ও উদ্ভাবনের সংস্কৃতি: ইসরায়েলে স্টার্টআপের সংখ্যা ও পেটেন্ট আবিষ্কারের হার তাদের উদ্ভাবনী মনোভাবের প্রমাণ।

বর্তমান বিশ্বে ইহুদীদের অগ্রগতি:

ইহুদীরা বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে ইহুদীদের অনুপাত অনেক বেশি (২০% এর বেশি)।
তারা উন্নত প্রযুক্তি ও সামরিক শক্তির বিকাশ ঘটিয়েছে। উদাহরণ:
o আইনস্টাইন (আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, পদার্থবিজ্ঞান)
o জোনাস সাল্ক (পোলিও ভ্যাকসিনের আবিষ্কার)
o সার্গেই ব্রিন (গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা)
o মার্ক জাকারবার্গ (ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা)
o ইসরায়েলের সামরিক প্রযুক্তি (আয়রন ডোম, ড্রোন প্রযুক্তি)

ইজরায়েলের আয়রন ডোম:

ইজরায়েলের আয়রন ডোম (Iron Dome) হলো একটি অত্যাধুনিক শর্ট-রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যা ইজরায়েলের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মূলত রকেট, আর্টিলারি শেল এবং অন্যান্য ক্ষুদ্রাকার আক্রমণাত্মক প্রজেক্টাইল প্রতিরোধের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। নিচে আয়রন ডোমের বিস্তারিত ও এর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
আয়রন ডোমের উৎপত্তি ও উন্নয়ন
উদ্দেশ্য: ২০০৬ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধের সময় ইজরায়েল হাজার হাজার রকেট আক্রমণের সম্মুখীন হয়। এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইজরায়েল একটি কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। আয়রন ডোম এই প্রয়োজনীয়তা থেকেই উদ্ভূত হয়।
উন্নয়ন: ইজরায়েলের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস (Rafael Advanced Defense Systems) এবং ইজরায়েল এয়ারোস্পেস � Ascending (sometimes descending) order:

কার্যপদ্ধতি:

আয়রন ডোম একটি তিন স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থা:
1. রাডার: এটি আকাশে আগত রকেট বা প্রজেক্টাইল সনাক্ত করে। রাডারটি ৪ থেকে ৭০ কিলোমিটার (প্রায় ২.৫ থেকে ৪৩ মাইল) দূরত্বের মধ্যে আক্রমণ শনাক্ত করতে সক্ষম।
2. কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম: রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এটি নির্ধারণ করে যে আগত রকেটটি জনবহুল এলাকায় আঘাত হানবে কি না। যদি না হয়, তবে তা অবাধে পড়তে দেওয়া হয়, যাতে ইন্টারসেপ্টর মিসাইল নষ্ট না হয়।
3. ইন্টারসেপ্টর মিসাইল (তামির): যদি রকেটটি হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়, তবে তামির (Tamir) নামক ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ছোড়া হয়। এটি আকাশে রকেটের সাথে সংঘর্ষ করে তা ধ্বংস করে। প্রতিটি ব্যাটারিতে ৩-৪টি লঞ্চার থাকে, যার প্রতিটিতে ২০টি করে তামির মিসাইল থাকতে পারে।

কার্যকারিতা:

সাফল্যের হার: ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, আয়রন ডোমের সাফল্যের হার ৮৫-৯০%। ২০১১ সালে প্রথম সফল ইন্টারসেপশনের পর থেকে এটি হাজার হাজার রকেট প্রতিহত করেছে।
পরীক্ষা: ২০১২ সালে হামাসের সাথে সংঘর্ষে এটি ১,৫০০টির মধ্যে প্রায় ৯০০টি রকেট সনাক্ত করে এবং ৮৫% এর বেশি ইন্টারসেপ্ট করে। ২০২৩ সালে হামাসের ব্যাপক আক্রমণেও এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
বৈশিষ্ট্য: এটি দিন-রাত এবং সব আবহাওয়ায় কাজ করতে সক্ষম। এর গতিশীলতা এটিকে দ্রুত স্থানান্তরযোগ্য করে তোলে।

সীমাবদ্ধতা:

স্যাচুরেশন পয়েন্ট: ব্যাপক রকেট আক্রমণের ক্ষেত্রে (যেমন ২০২৩ সালে হামাসের ২,৫০০-৫,০০০ রকেটের ব্যারেজ), আয়রন ডোম অতিরিক্ত চাপে পড়তে পারে। এর ইন্টারসেপ্টরের সংখ্যা সীমিত, তাই অতিরিক্ত রকেট প্রতিহত করা সম্ভব নাও হতে পারে।
ব্যাপ্তি: এটি শুধুমাত্র শর্ট-রেঞ্জ (৪-৭০ কিমি) রকেটের জন্য কার্যকর। লং-রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইলের জন্য ইজরায়েলের অ্যারো বা ডেভিড’স স্লিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।
কৌশলগত সীমা: এটি আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে, কিন্তু আক্রমণকারীদের নির্মূল বা প্রতিহত করতে পারে না।

অর্থনৈতিক দিক:

খরচ: প্রতিটি তামির মিসাইলের মূল্য প্রায় ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার। একটি সম্পূর্ণ ব্যাটারির খরচ প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রকল্পে ২.৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
লাভজনকতা: সস্তা রকেটের (যেমন হামাসের কাসাম রকেট) বিপরীতে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করা হলেও, জনপ্রাণ ও অবকাঠামো রক্ষার তুলনায় এটি লাভজনক বলে বিবেচিত হয়।

মুসলিম বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকার কারণ:

বিজ্ঞানের প্রতি অনীহা: অনেক মুসলিম সমাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চার চেয়ে ধর্মীয় শিক্ষা বা মুখস্ত বিদ্যাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা: মুসলিম দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থায় গবেষণা ও ব্যবহারিক জ্ঞানের চেয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক স্থবিরতা: প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ ও অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।
সাংস্কৃতিক মনোভাব: বিজ্ঞানকে "পশ্চিমা" বা "ধর্মবিরোধী" হিসেবে দেখার প্রবণতা অনেক সময় জ্ঞানচর্চার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

মুসলিম বিশ্বের পিছিয়ে পড়ার কারণ:

মুখস্ত বিদ্যার প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা।
মৌলিক গবেষণার অভাব এবং প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের ঘাটতি।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব কম।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতি।
বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞানীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগের অভাব।
উন্নত দেশগুলোর ওপর প্রযুক্তিগত নির্ভরতা।
ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয় না করা।

মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের সীমাবদ্ধতা:

প্রতীকী বর্জন: কোকাকোলার মতো পণ্য বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়, কিন্তু তার বিকল্প তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই।
প্রযুক্তিগত নির্ভরতা: ফেসবুক, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়, যেগুলো মুসলিম বিশ্বের নিজস্ব আবিষ্কার নয়।
শুধু দোয়ার ওপর ভরসা: ১৯৪৮ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দোয়া করা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপের অভাবে কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
অর্থনৈতিক দ্বৈততা: ইসরায়েল বিরোধী পোস্ট করে কেউ কেউ ডলার আয়ের চেষ্টা করে, যা একটি বৈপরীত্য প্রকাশ করে।

ইতিহাসে মুসলিম বিশ্বের জ্ঞানচর্চার ঐতিহ্যঃ

স্বর্ণযুগ: ৮ম থেকে ১৩শ শতাব্দীতে মুসলিম বিশ্ব গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা ও দর্শনে অগ্রগামী ছিল।
উদাহরণ: ইবনে সিনা, আল-খাওয়ারিজমি, ও আল-রাযির মতো বিজ্ঞানীদের অবদান আজও স্বীকৃত।
ঐতিহ্য হারানো: সময়ের সাথে এই জ্ঞানচর্চার ধারা কমে গেছে, যা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন।

ইসলামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব:

কুরআনে ৭৫০+ আয়াতে বিজ্ঞান ও গবেষণার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন: "জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরজ।"
মুসলিম স্বর্ণযুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান:
o আল-খোয়ারিজমি (অ্যালগরিদম, বীজগণিত)
o ইবনে সিনা (চিকিৎসাবিজ্ঞান)
o আল-হায়থাম (আলোকবিজ্ঞান)
o ইবনে রুশদ (দর্শন ও বিজ্ঞান)
o মুসলিম স্থাপত্য ও ইঞ্জিনিয়ারিং (আলহাম্ব্রা, তাজমহল)

মুসলিম বিশ্বের জন্য সমাধানের পথঃ

শিক্ষা সংস্কার: শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে।
গবেষণায় বিনিয়োগ: সরকার ও বেসরকারি খাতে গবেষণার জন্য বাজেট বাড়াতে হবে।
সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: বিজ্ঞানকে ধর্মের সাথে সংযুক্ত করে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা দরকার।
নিজস্ব প্রযুক্তি উন্নয়ন: কোকাকোলার মতো পণ্যের বিকল্প বা ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।
তরুণদের উৎসাহ: তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে আকৃষ্ট করতে প্রশিক্ষণ ও সুযোগ দিতে হবে।

মুসলিম বিশ্বের করণীয়:

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ।
গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ: মুসলিম দেশগুলোর R&D তে GDP-র কমপক্ষে ২-৩% বিনিয়োগ করা।
বিশ্বমানের বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা।
স্টার্টআপ ও প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো: মুসলিম বিশ্বে নিজস্ব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা: মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা গড়ে তোলা।
সামরিক ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির উন্নয়ন: নিজস্ব অস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন।
উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে তোলা: তরুণদের উদ্ভাবনী কাজে উৎসাহিত করা।


বিশ্ব নেতৃত্বে মুসলিমদের ফিরতে হলে যা করতে হবে:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
নতুন প্রজন্মকে গবেষণামুখী ও উদ্ভাবনী হতে উদ্বুদ্ধ করা।
উন্নত দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়া।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
আধুনিক বিজ্ঞান ও ধর্মীয় শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন।

ধর্ম ও বিজ্ঞানের সমন্বয়:

ইসলামে জ্ঞানের গুরুত্ব: কুরআনের প্রথম আয়াত "ইকরা" (পড়ো) এবং হাদিসে জ্ঞানার্জনের নির্দেশ বিজ্ঞানচর্চার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ব্যবহারিক পদক্ষেপ: দোয়ার পাশাপাশি বাস্তব কাজের সমন্বয় করা দরকার, যা ইসলামের শিক্ষার সাথে মানানসই।

উপসংহার:

ইহুদি সম্প্রদায়ের অগ্রগতি প্রমাণ করে যে জ্ঞান ও প্রযুক্তি যে কোনো জাতিকে শক্তিশালী করতে পারে। মুসলিম বিশ্বের জন্য শুধু প্রতিবাদ বা দোয়া যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা। ইসরায়েলের থেকে উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অর্জনের মাধ্যমেই মুসলিম বিশ্ব নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে। এটি সম্ভব হবে শিক্ষা, গবেষণা, এবং উদ্ভাবনী মনোভাবের সমন্বয়ে। ইতিহাসের স্বর্ণযুগ পুনরুদ্ধার করতে হলে আজ থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রগতি ছাড়া মুসলিম বিশ্বের পুনরুত্থান সম্ভব নয়। শুধু ইসরায়েল বর্জনের ডাক দিয়ে বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব নয়। বরং মুসলিমদের নিজেদের প্রযুক্তি ও জ্ঞানে উন্নতি করতে হবে, নিজেদের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বাড়াতে হবে। বিজ্ঞান, গবেষণা, ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জনই আমাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ সপ্তাহিক ছুটি কয়দিন হওয়া উচিত?

Compare and Contrast Between Public University and Private University

Comparison and Contrast Between Online Class and In-Campus Class